শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট

শুক্রবার GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত ছিল, যা টেকনিক্যাল পরিস্থিতি এবং বিদ্যমান বাজার পরিস্থিতির ভিত্তিতে পুরোপুরি যৌক্তিক ছিল। মনে করিয়ে দেওয়া দরকার যে দীর্ঘ সময় ধরে ডলারের দরপতন হয়েছে, এবং এর পেছনে মাত্র একটি কারণ ছিল — সেটি হচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রোটেকশনিস্ট বা সুরক্ষাবাদী নীতিমালা। অন্যান্য সমস্ত বিষয় প্রায় উপেক্ষিতই হয়েছিল। তবে বুধবার সন্ধ্যায় এটা স্পষ্ট হয়ে যায় যে সাম্প্রতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ফেডারেল রিজার্ভ এখনো আগ্রাসীভাবে সুদের হার কমানোর কোনো পরিকল্পনা করছে না এবং পূর্বের মতোই ২০২৫ সালে দুইবারের বেশি সুদের হার হ্রাসের কোনো সম্ভাবনা রাখছে না। উপরন্তু, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি নিয়ে ফেড কোনো সমস্যাও দেখছে না। সুতরাং, মার্কিন ডলার অতিরিক্ত ও দীর্ঘ সময় ধরে অযৌক্তিকভাবে দরপতনের শিকার হয়েছে। সেই হিসেবে, বর্তমানে অন্তত একটি কারেকটিভ মুভমেন্ট হিসেবে হলেও এই পেয়ারের দরপতন সম্পূর্ণভাবে যৌক্তিক। অবশ্যই, আগামীতে অল্প সময়ের মধ্যে ৬ মাস থেকে ১৬ বছর পর্যন্ত চলমান দীর্ঘমেয়াদি নিম্নমুখী প্রবণতা আবার শুরু হবে এই প্রত্যাশা করা করা অতিরিক্ত আশাবাদী হতে পারে, কিন্তু এই প্রবণতা এখনো বিদ্যমান রয়েছে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে শুক্রবার দুটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল, কিন্তু সেগুলোর ভিত্তিতে ট্রেড করার বিশেষ কোনো যৌক্তিকতা ছিল না। প্রথমত, এই পেয়ারের মূল্যের দৈনিক ভোলাটিলিটি বা অস্থিরতার মাত্রা খুব কম ছিল। দ্বিতীয়ত, উভয় সিগন্যালই মার্কেটে ট্রেডিং হওয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে গঠিত হয়েছিল। যদি এগুলো শক্তিশালী এবং স্পষ্ট সিগন্যাল হতো, তাহলে ট্রেড করার যৌক্তিকতা থাকতে পারত। কিন্তু বাস্তবে এমনটি ছিল না।
সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে অনেক আগেই GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা শুরু হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু ট্রাম্পের গৃহীত পদক্ষেপ সেটা হতে দিচ্ছে না। আমরা এখনো মধ্যমেয়াদে 1.1800 লেভেলের দিকে পাউন্ডের দরপতনের প্রত্যাশা করছি, যদিও ট্রাম্পের কার্যক্রমের প্রভাবে ডলারের দরপতন আর কতদিন স্থায়ী হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। একবার এই মুভমেন্ট শেষ হলে, সব টাইমফ্রেমে টেকনিক্যাল স্ট্রাকচার উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হতে পারে, তবে দীর্ঘমেয়াদে এখনো এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতাই বিরাজ করছে। ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্য অকারণে বৃদ্ধি পায়নি, তবে আবারও এটি অতিরিক্ত এবং অযৌক্তিকভাবে শক্তিশালী হয়েছে।
ঘণ্টাভিত্তিক চার্টের টেকনিক্যাল স্ট্রাকচার অনুযায়ী, সোমবার GBP/USD পেয়ারের মূল্য আরও হ্রাস পেতে পারে। পাউন্ড আবারও অতিরিক্ত ক্রয় করা হয়েছে এবং অযৌক্তিকভাবে দামী হয়ে উঠেছে।
৫ মিনিটের চার্টে প্রাসঙ্গিক ট্রেডিং লেভেলগুলো হলো: 1.2301, 1.2372–1.2387, 1.2445, 1.2502–1.2508, 1.2547, 1.2613, 1.2680–1.2685, 1.2723, 1.2791–1.2798, 1.2848–1.2860, 1.2913, 1.2980–1.2993, 1.3043, 1.3102–1.3107। সোমবার যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রে পরিষেবা ও উৎপাদন খাতের PMI প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। এগুলো তুলনামূলকভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন হলেও, এগুলো সামগ্রিকভাবে নয় বরং মূলত স্থানীয় পর্যায়ে মার্কেট সেন্টিমেন্টে প্রভাব বিস্তার করতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শন করার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত কৌশল হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।